মৃত্যুতে থেমে যায় নি যে জীবন
-প্রয়াত রাশেদ হোসেন স্মরণে-
মৃত্যু কি একটা জীবনের যবনিকা? মঞ্চের পর্দা নেমে যাওয়ার পরও একটা শক্তিশালী নাটকের অনুরণন দর্শকের হৃদয়ে থেকেই যায়। তেমনি করেই জীবদ্দশায় ভালোবেসে কেউ বিশাল কিছু কাজ করে গেলে সেটা হয় কিংবদন্তী। তার রেশ, প্রভাব ও ধারাবাহিকতা বয়ে চলে স্রোতস্বিনী নদীর পানির মতো। কঠোর পরিশ্রমের অনবদ্য সৃষ্টি তখন হয়ে উঠে তার পরিচয়। যার কাজের গভীরতা ও ব্যাপ্তি যতো সুদূর প্রসারী জীবিতদের স্মৃতিতে সে ততো বেশী জীবন্ত। যতক্ষণ পর্যন্ত তার কর্ম, অবদান ও উদাহরণ অনুরাগীদের কাছে বিদ্যমান ততক্ষণ পর্যন্ত মৃত্যু তাকে লুপ্ত করতে পারে না। সে জন্য বলা যেতে পারে কিছু মানুষের জন্য মৃত্যু শুধুই একটা ছেদ মাত্র, এক অধ্যায়ের শেষ, যেখান থেকে আরেক অধ্যায়ের শুরু!
এই প্রসঙ্গটা আমি কেনো টানলাম? টেক্সাস অঙ্গ-রাজ্যের ডালাস শহরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনন্য ব্যক্তিত্ব রাশেদ হোসেনের মৃত্যুতে আমার এই কথাগুলোই মনে হলো। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ক্যানসার রোগের সাথে লড়ছিলেন। অসাধারণ জীবনবোধ সম্বলিত এই মানুষটি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লড়েছেন প্রচণ্ড প্রাণশক্তি দিয়ে। আর তাই মাঝে আশার কথাও শোনা গিয়েছিল। তিনি সুস্থ হতে চলেছেন। তিনি নিজে গাড়ি চালাতে পারছেন। কিন্তু না বিধাতার পরিকল্পনা ছিল অন্যরকম। নভেম্বরের ২৮ তারিখ (২০১৮) ডালাস শহরের ম্যাককিনি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
রাশেদ হোসেন ছিলেন প্রচণ্ড কর্ম-স্পৃহা সম্পন্ন একজন মানুষ যিনি ঠিক জানতেন তিনি কি চান আর তা সার্থক করতে কি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। তার স্বপ্ন এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে প্রতিফলিত করতে তার দক্ষতা ছিল অসাধারণ। একটা স্বপ্ন-দ্বীপ থেকে আরেকটা স্বপ্ন-দ্বীপে তিনি সন্তরণ করে গেছেন অপার দক্ষতায়, আর রেখে গেছেন সংস্কৃতি পিপাসুদের হৃদয়ে সুগভীর ছাপ। পুরনোকে ভেঙ্গে নতুন রূপ দিতে, সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন ঘটাতে তার জুড়ি মেলা ভার। নিত্য নতুন আইডিয়া সম্পন্ন এ রকম একজন মানুষকে বাঙালি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আরও অনেক দীর্ঘ সময়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল ।
বাঙালি সংস্কৃতি হাজার বছরের পুরনো হলেও বিশ্ব দরবারে এর পরিচিতি আজও তার তুলনায় যৎ-সামান্য। ৭০/ ৮০র দশকে আগে তার অবস্থা ছিল আরও শোচনীয়। সেই সময়ে রাশেদ হোসেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালি সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশে নেমে পড়েন। তখন কাজটা কতো কঠিন ছিল সেটা যে কেউ একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন। প্রথমত এমেরিকায় সে সময়ে বাঙালির সংখ্যা ছিল নেহায়েত-ই হাতে গোণা কয়েকজন। তারপর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহী মানুষ পাওয়াটা ছিল কঠিন। কিন্তু বাঙালি সংস্কৃতির অপরিসীম শক্তির মন্ত্রে বিশ্বাসী রাশেদ হোসেন সব প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ আরম্ভ করেছিলেন। সব বাধা অতিক্রম করে দলবদ্ধভাবে তিনি এমেরিকার বুকে একের পর এক উচ্চ মানের বাংলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের চালিকা শক্তি হয়ে যুক্ত থাকেন।
প্রবাসে গুনগত মানের নান্দনিক কিছু আয়োজন করাটা খুবই কষ্টকর! এখানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্যে কেউ কোনো পারিশ্রমিক পান না। যারা কাজগুলো করেন তারা মনের খোরাকের জন্যে স্বেচ্ছাশ্রম দেন। ব্যস্ত প্রবাস জীবনে জীবিকা ও পরিবারের পর আলাদা করে সময় বের করাটা আরও দুরুহ। তারপরে আছে নিয়মিত মহড়ার জন্য সময় বের করা, অডিটোরিয়াম সহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ যোগাড় করা। আবার দেশ থেকে শিল্পী আনলে তাদের জন্যেও বড় ধরণের অর্থ ও সময় দিতে হয়। এই সব সেবা প্রবাসী বাঙালি সাংস্কৃতিক কর্মীদের করতে হয়। রাশেদ হোসেন নিজে এই সব কার্যক্রমের দিক নির্দেশনা দিয়ে এবং অংশগ্রহণ করে দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছেন যে প্রবাসীরা কষ্ট সাধ্য হলেও বাংলা সংস্কৃতির পতাকাকে অনেক উঁচুতে মেলে ধরতে পারে।
সংস্কৃতি চর্চা ও পরিবেশনা করতে হলে দরকার সম-মনাদের সংঘবদ্ধ দল। ১৯৮৮ সালে বাঙালি সংস্কৃতিকে এমেরিকার বুকে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং অন্যান্য জাতির সংস্কৃতির সাথে সেতু বন্ধন করার প্রচেষ্টায়, আর্ভিং আর্টস সেন্টারের ছত্র ছায়ায়, ডালাসে গড়ে উঠে “অবাক” (Academy of Bangla Arts and Culture-ABAC)। রাশেদ হোসেন ছিলেন অবাকের মূল প্রতিষ্ঠাকারীদের একজন। তিনি গত ৩০ বছরের অবাক আয়োজিত অসংখ্য দর্শক নন্দিত অনুষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন। নির্দেশনা, পরিচালনা থেকে আরম্ভ করে অনুষ্ঠানের যখন যেখানে তাকে প্রয়োজন হয়েছে, তখন তিনি সেই ভূমিকা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করেছেন। সব বয়সী সাথীদের সাথে মিশে যাবার এক অসাধারণ ক্ষমতা ছিল তার। তিনি এই ক্ষমতা ব্যবহার করে যারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন, তাদের সর্বোচ্চটা বের করেই স্টেজে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করতেন। হোক সেটা গান, নাচ, অভিনয় কিংবা কবিতা আবৃত্তি। তিনি নিজে শিল্পী ছিলেন না কিন্তু শিল্প অনুরাগ এবং জ্ঞান ছিল তার অপরিসীম।
আশির দশকে অবাক আয়োজিত রবীন্দ্রনাথের “শ্যামা” নৃত্য নাট্যে ব্যালে নৃত্য শিল্পীদের ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটা ছিল সে সময়ের জন্যে একেবারে ছকের বাইরে (out of the box) একটা উপস্থাপনা। এরকম ভাবে রবি ঠাকুরের চন্ডালিকা থেকে আরম্ভ করে সুললিত সঙ্গীতানুষ্ঠান সহ অন্যান্য সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল বৈচিত্রের স্বাক্ষর। প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে অবাকের সিগনেচার অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা দেশ-বিদেশের সবাইকে বিস্মিত করতো। অবাকের যে কোনো অনুষ্ঠানের দর্শক এক বাক্যে স্বীকার করে নিতেন যে এই সংগঠন একের পর এক আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠান উপস্থাপন করতে সক্ষম। আর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না এ সব অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকতেন রাশেদ হোসেন। এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের বহু প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর সাথে তার সখ্যতা ছিল এবং তাদের একটা বড় অংশ অবাকের আয়োজনে ডালাসে তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।
আমার সাথে রাশেদ হোসেনের পরিচয় সম্ভবত ১৯৯৪-৯৫ সালের দিকে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে অবাকে যোগদান না করলেও আমার সহধর্মিণী মারুনা হাসান রাহী ছিল সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সংযুক্ত। এক মেয়াদের জন্যে সে অবাকের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দারুণভাবে সেই দায়িত্ব পালন করেছিল। অনেকটা সেই সুবাদে রাশেদ হোসেনের সাথে বেশ নিয়মিত ভাবেই যোগাযোগ ছিল। সে সময়ে একটা রেওয়াজ ছিল কার্যনির্বাহী বোর্ডের সদস্যদের স্বামী/স্ত্রী (spouse) কে একই ধরণের মর্যাদা দেয়া হতো। সেটা ছিল আমার জন্যে একটা বাড়তি পাওয়া । যাই হোক অবাকের মিটিঙে কিংবা আড্ডায় তিনি সব সময়ে আমার মতামত জানতে আগ্রহী ছিলেন।
রাশেদ হোসেন যেমন ছিলেন একজন সিরিয়াস সংস্কৃতি কর্মী তেমনি রসিকতায় ও তিনি কম যেতেন না। উনাকে মাঝে চাকরির কারণে ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিলে চলে যেতে হয়েছিল। একবার তার আমন্ত্রণে সেখান বেরাতে গিয়েছিলাম। দুপুরের খাবার পরে উনি আমাকে বললেন, “চলো তোমাকে সমুদ্রের উপর থেকে হাঁটিয়ে নিয়ে আনি।” প্রথমে ভেবেছিলাম তিনি রসিকতা করছেন; পানির উপরে কি আর হাঁটা যায়? পরে সৈকতে যেয়ে দেখলাম, বেশ কিছুদূর পর্যন্ত সমুদ্রের উপর পায়ে হেঁটে যাবার পাটাতন বানানো আছে, যেন হেঁটে গেলে আটলান্টিক পেরিয়ে বুঝি ওপারে বিলেত পৌঁছে যাওয়া যাবে। তার সাথে আমরা সেইবার বাস্তবতই পানির উপরে অনেক দূর হেঁটেছিলাম। দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবন স্বদেশের মাটির জন্য তাকে বুভুক্ষু করে তুলেছিল। পরবর্তীতে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে তিনি ছুটে যান বাংলাদেশে। কিন্তু তার হৃদয়ে ছিল ডালাস। ফিরে এসেছিলেন তার চেনা শহরটাতে। নিজেকে নতুন করে জড়িয়ে ছিলেন ‘অবাক’ এর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে।
একটা ঘটনা খুব উল্লেখ করতে ইচ্ছে হচ্ছে যার সাথে আমিও ওতপ্রোত ভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম। ২০১২ সালে অবাক থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তিন দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হবে। সেখানে বাংলাদেশের আদলে গান, নাচ, কবিতা, নাটক এবং সেমিনারসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত করা হলো। আমি অবাকের কমিটির কাছে একটা আর্জি পেশ করলাম। পরীক্ষামূলক-ভাবে আমার লেখা দুটো বাংলা বই প্রকাশ করার ব্যাপারে আমার আগ্রহের কথা জানালাম। উপস্থিত সবাই সায় দিলো। রাশেদ হোসেন মহা উৎসাহে বললেন যে কাজটা আমাকে করতেই হবে। অনেকটা রায় দেবার ভঙ্গিতে আমার দিকে তাকিয়ে জানালেন যে অটোগ্রাফ সহ বই কিনতে লাইন লেগে যাবে। আমি ভাবছিলাম বিদেশে টাকা খরচ করে কয়জন বাঙালি-ই বা বই কিনবে। কিন্তু আমার আশংকা ভীষণভাবে ভুল প্রমাণিত হলো। তিন দিনে আমার সবগুলো বই বিক্রি হয়ে গেল। এবং বলতে আনন্দ হচ্ছে যে এখন নিয়মিতভাবে ঢাকার একুশের বই মেলায় আমার লেখা বই বের হয়। প্রতিবারই বই বের হওয়ার আগে ভাবি, উনার ভবিষ্যৎবাণী যেমন ডালাসে ফলে ছিল; তার পুনরাবৃত্তি যদি প্রতিবারই হতো! তিনি আমাকে একজন লেখক হিসেবে বিকশিত হতে ভূমিকা রেখেছিলেন। ঠিক একইভাবে তিনি প্রচুর সংগঠক ও সাংস্কৃতিক কর্মীও তৈরি করে গেছেন এই ডালাস শহরে।
দীর্ঘ আয়ুষ্কাল চাইতে জীবনের গভীরতা অনেক বেশী তাৎপর্য বহন করে। রাশেদ হোসেন পরের প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতির আলোয় উদ্ভাসিত করতে কাজ করেছেন। বলা যায় এটা ছিল তার জীবনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। অবাক ছিল তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্লাটফর্ম। সংগঠনটা ছিল তার সন্তানের মতো। তিনি ছিলেন তিন কন্যা ফারহিন, মেহেরিন ও তাজরিনের বাবা। কিন্তু কেউ তার কয় সন্তান জানতে চাইলে বলতেন, তার তিন মেয়ে ও এক সংগঠন, যার নাম ‘অবাক’।
আরেকটা ঘটনা বলি। একবার আর্ভিং আর্ট সেন্টারে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অর্থায়নের ব্যাপারে একটা সভা হচ্ছিল। প্রতিটা সংগঠন থেকে একজন করে তাদের কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। রাশেদ হোসেন অবাককে প্রতিনিধিত্ব করে সংগঠন সম্পর্কে কিছু বলার জন্যে উঠে দাঁড়ালেন। কিছুক্ষণ পরে দেখলাম উনি রুম ভর্তি মানুষের সামনে অঝর ধারায় কেঁদে চলেছেন; তার মুখ থেকে কোনো কথা বেরুচ্ছে না। অবাককে নিয়ে যে তার কি সুগভীর আবেগ ছিল তা প্রকাশের জন্য সঠিক শব্দমালা তিনি খুঁজে পাচ্ছিলেন না, তাই তিনি কাঁদছিলেন। প্রকৃতপক্ষে এই প্রচণ্ড ভালোবাসা প্রকাশ করার ক্ষমতা কারোর কাছেই নাই। তার জীবনে আরেকজন মানুষের অবদানের কথা অবশ্যই বলাটা দরকার। তিনি রাশেদ হোসেনকে একেবারে ঠিক পাশ থেকে প্রতিটা কাজে উৎসাহ ও সাহস যুগিয়ে গেছেন। তিনি হচ্ছেন একজন অসাধারণ মহিলা ও তার জীবন সঙ্গিনী গুলশান হোসেন মিলি। যোদ্ধা এই মানুষটিকে সব রকমের সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে রেখেছিলেন এই মহিয়ষী নারীঃ Hats off to you Mili Bhabi.
পশ্চিম বঙ্গের সাম্প্রতিক কালের স্বনামধন্য কবি শ্রী জাত সঙ্গীত শিল্পী কালী প্রাসাদের অকাল প্রয়াণের পর “মাটির শ্লোক” কবিতায় লিখেছিলেন, “গান ফিরেছে মাটির কাছে। মৃত্যু কেবল মিথ্যা হোক।” রাশেদ হোসেন তার শেষ বিশ্রামের আবাস হিসেবে বেছে নিয়েছেন বাংলার মাটি। তিনি এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার আদি নিবাসে চির নিদ্রায় শায়িত। যার কর্ম; জীবন থেকে বড়, আবারো একবার বলি তার মৃত্যু মিথ্যা। যতদিন বাঙালি থাকবে, বাংলা সংস্কৃতির চর্চা থাকবে ততদিন তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।
পরিশেষে মাওলানা জালালুদ্দিন রুমির “যখন আমার মৃত্যু আসবে” (অনুবাদ: রেজা রিফাত) কবিতার কয়েকটা লাইন উল্লেখ করছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহ তা’ আলার কাছে তার আত্মার পরম শান্তি কামনা করে গভীরতম শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করছিঃ
যখন আমার মৃত্যু আসবে
যখন আমার কফিন নিয়ে যাবে,
তুমি কখনো এটা ভেবোনা---
আমি এ পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছি
চোখ থেকে অশ্রু ফেলোনা
মুষড়ে যেওনা গভীর অবসাদ কিংবা দুঃখে
আমি পড়ে যাচ্ছি না কোনো অন্তহীন গভীর ভয়ঙ্কর কুয়ায়।
যখন দেখবে আমার মৃতদেহ নিয়ে যাচ্ছে, তুমি কেঁদো না—
আমি কোথাও যাচ্ছি না, আমি কেবল পৌঁছে যাচ্ছি অনন্ত প্রেমে।
ডিসেম্বর ৬, ২০১৮
কাজী হাসান
লেখকঃ quazih@yahoo.com